ডিজিটাল বাংলাদেশ
২০০৮ সালের ১২ ই ডিসেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত সেই রূপকল্পের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে ছিলো জনগণ , জবাবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করার মাধ্যমে দিয়েছিল জনসেবার সুযোগ। এরপর আর থেমে থাকেননি বঙ্গবন্ধুকন্যা তার নেতৃত্বে ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর তত্ত্বাবধানে ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবে।
ঘরে বসেই মিলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি চাকরির আবেদন জন্ম-মৃত্যু সনদ পাসপোর্ট এর জন্য ফরম পূরণ থেকে শুরু করে করোনার টিকা রেজিস্ট্রেশন এর মত সব সেবা। শুধু তাই নয় আইসিটি খাতে বিগত ১২ বছরে হয়েছে প্রযুক্তিনির্ভর ২০ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থা যার প্রেক্ষিতে অনলাইন শ্রমশক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়।
আইসিটি খাতের রপ্তানি আয় এখন ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার, দেশের প্রায় সাড়ে ৬ লাখের বেশি ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং খাত থেকে বছরে আয় করেছেন সাড়ে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার এর বাইরে দেশের ১০ কোটিরও বেশি নাগরিক ব্যবহার করছে মোবাইল ফিনান্সিয়াল ওয়ালেট।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটিতে সবমিলিয়ে বহির্বিশ্বের কাছে এক বিস্ময়ের নাম বাংলাদেশ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন বলেই আজ এখানে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরনের গল্প
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচারণা “ ডিজিটাল বাংলাদেশ” চলমান করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে লাখ লাখ মানুষকে অনলাইন পরিসেবাদির মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতে অনুপ্রাণিত করেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তবতা কারণ চলমান করোনা সংকটে বিপুল সংখ্যক লোক আধুনিক আইসিটি ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিজ নিজ চাকরিতে নিযুক্ত রয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় করোনা সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে প্রকৃত লাভবান হওয়ার কৌশল অর্জনে কঠোর পরিশ্রম করছেন। করোনা ভাইরাসের দ্বারা সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয়সহ দেশের লাখ লাখ জীবন-জীবিকার হুমকিস্বরূপ। তবে ডিজিটাল ব্যবস্থা ব্যবসায়িক ক্রিয়াকলাপকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
অন্যদিকে, দেশের মানুষ এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা গ্রহণ করছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ক্লাসে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এমনকি, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী কৃষকরা তাদের কৃষি পণ্যগুলোর দরদাম সহজেই জানতে পারছেন। বাংলাদেশকে ডিজিটালাইজড দেশে পরিণত করার জন্য কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়, সামাজিক উদ্যোক্তা, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থা, রাজনীতিবিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলমান সংকটের মধ্যেও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মতবিনিময়সহ সভা ও মিডিয়া ব্রিফিংকরে যাচ্ছেন। করোনার কারণে মার্চ মাসে সারাদেশে ব্যবসা, বাণিজ্য, নিয়মিত সরকারী ও বেসরকারী কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়ে পুরো দৃশ্যপট নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়ে পড়েছে। তবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ই-বাণিজ্য, ই-লার্নিং এবং অন্যান্য ক্রিয়াকলাপ বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইন বাণিজ্য, ব্যবসা ও শিক্ষা তথ্যের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ও ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করতে কম সময় নেয়।
এছাড়াও করোনা প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে মানুষজন অনলাইনে সম্পূর্ণ চিকিৎসাসহ খুব সহজেই মানসিক স্বাস্থ্য থেরাপি পাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ( বুয়েট) এর কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. এম কায়কোবাদ ৩ জুলাই এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে করোনা মহামারী পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমাদের আরও ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশ ও শক্তিশালী করা দরকার। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত এই খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করার পরেও বাংলাদেশ এখনও পিছিয়ে রয়েছে। তবে, আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, যার গতিশীল নেতৃত্ব ইতিমধ্যে এই করোনা ভাইরাস সঙ্কটের সময়ে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বদলেছে। ‘’ বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক এম কায়কোবাদ আরও বলেন, ‘‘ এই সংকটের সময় ডিজিটাল সুবিধায় গ্রাম ও শহরের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য রয়েছে। গ্রাম ও শহরের এই বৈষম্য হ্রাস করতে হবে। ‘’
১৬.২৯ কোটি মোবাইল গ্রাহকদেরমধ্যে বর্তমানে দেশের প্রায় ১০ কোটি ১১ লাখ ৮৬, ০০০ গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। নেটিজেনরা আর্থিক, ই-বাণিজ্য, রাইড শেয়ারিং ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবাও পাচ্ছেন। এ ছাড়া দেশে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশের টেলিকম ও ডিজিটাল প্রযুক্তি খাত গত ১১ বছরে বিদেশী বিনিয়োগের আকাঙ্খিত খাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইসিটি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ২০২১-২৩ এর মধ্যে বাংলাদেশে ফাইভ জি মোবাইল নেটওয়ার্কের জন্য একটি বিস্তৃত নীতিমালা তৈরি করবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ ডেটা ডাউনলোড ও আপলোডের গতি বাড়িয়ে আরও স্থিতিশীল সংযোগের প্রতিশ্রুতি দেয়। এগুলো সবই রেডিও তরঙ্গকে আরও ভালভাবে ব্যবহার করাসহ বিভিন্ন ডিভাইসের মাধ্যমে মোবাইল ইন্টারনেটে প্রবেশে আরও সক্ষম করবে।
আরো দেখুন: