বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা এবং জাতির জনক হিসেবে সারা পৃথিবীতে পরিচিত। তিনি ১৭ ই মার্চ ১৯২০ সালে ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম সায়রা খাতুন। তিনি সবার কাছে মুজিব ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
আরও দেখুনঃ সাধারণ জ্ঞান
বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
গিমা ডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় তার ছাত্র জীবনের সূচনা হয়। এবং পরবর্তীতে মাদারীপুর ইসলামিয়া হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হন। সে সময় তার চিকিৎসক ছিলেন ডাক্তার শিব পদ ভট্টাচার্য।
তারপর গ্লুকোমা রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তিন বছর লেখাপড়া বন্ধ থাকায় তিনি অনেকটা শিক্ষাজীবন থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েন। সবশেষে গোপালগঞ্জ মাথুরা নাথ মিশনারী স্কুলে আবারো পড়াশোনা শুরু করেন এবং সেখানেই তার রাজনৈতিক জীবনের হাতে খড়ি হয়।
১৯৪২ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ইন্টারমেডিয়েটে ভর্তি হন এবং বেকার হোস্টেলের ২৪ নং কক্ষে থাকতে শুরু করেন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিতে বেকার হোস্টেলের ২৩ নং রুম গ্রন্থাগার এবং ২৪ নং রুম মিউজিয়াম হিসেবে তৈরি করেছে।
কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করে একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন শেখ মুজিব। কৃষি মেলা উদ্বোধনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ এ গেলে সেখানে তিনি স্কুলের ছাত্রাবাস সংস্কারের দাবি জানান।
১৯৩৯ সালে মুসলিম লীগে যোগ দিয়ে তিনি গোপালগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন এবং নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের যোগদান ১৯৪০ সালে।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ফজলুল হক মিলান আয়তনে নাজমুল করিমের সভাপতিত্বে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ এর যুগ্ন সম্পাদক নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ১৯৫৩ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৬৬ সালের ৫ এবং ৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে বিরোধী দল গুলোর জাতীয় সম্মেলনে চৌধুরী মোঃ আলীর বাসভবনে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি পেশ করেন এবং একই বছরের পহেলা মার্চ দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। শেখ মুজিব তার জীবনের প্রায় ১৪ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। ব্রিটিশ আমলে ৭ দিন এবং পাকিস্তান আমলে 4675 দিন কারাগার যাপন করেছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রায় ২১ বার।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ মধ্যরাতে প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং সেদিন রাতেই পাকিস্তানীরা তাকে বন্দী করে।
১৯৭২ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর ১২ জানুয়ারি তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এবং ১৯৭৫ সালে ১৫ ই আগস্ট ভোর পাঁচটা পনের মিনিটের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাসায় তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।