আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কাঁচা ছোলা ও বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

প্রথমে কাঁচা ছোলার ব্যাপারে কথা বলি: আপনারা কিন্তু অনেকে কাঁচা ছোলা সম্পর্কে জানেন, আর কাঁচা ছোলা টা আপনারা অনেকে হয়তো খেতেও পছন্দ করেন। কিন্তু আপনারা কিন্তু মূলত জানেন না কাঁচা ছোলা খেলে আমাদের ঠিক কি উপকার হবে। এর উপকারিতা আমাদের জন্য কতটুকু? আজকে আমি আপনাদের সাথে এমন বিষয় শেয়ার করবো। তাহলে শুরু করা যাক?

১) শরীরের অস্থির ভাব ছোলা দূর করতে পারে তা ছাড়াও ছোলায় কিন্তু প্রচুর পরিমাণে শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর পরিমাণ রয়েছে।

২) আপনার যদি হঠাৎ দেহের মধ্যে অস্থির ভাব হয় তাহলে কিন্তু আপনি ছোলা খেয়ে নিতে পারেন, এবং নিশ্চয়ই আপনি উপকার পাবেন।

৩) কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে কাঁচা আঁদার সঙ্গে খেলে শরীরের আমিস ও এন্টিবায়োটিকের চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে। আমিষ মানুষকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায় এবং এন্টিবায়োটিক যে কোন রোগের জন্য প্রতিরোধ করে তোলে। 

৪) ছোলাতে দ্রবণীয় ও  অদ্রবণীয় দুই ধরনের আস রয়েছে, এই আস হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা দেখেছেন যে খাবারে ছোলা যুক্ত করলে টোটাল কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়।

৫) ছোলার মধ্যে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ধরনের খাদ্য বাস রয়েছে, যা হূদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। আস পটাসিয়াম, ভিটামিন সি , এবং ভিটামিন বি৬ হূদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে, ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।

৬) এর ডাল আস সমৃদ্ধ যা রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে, এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন ৪০৬৯ মিলিগ্রাম ছোলা খায় হূদরোগ থেকে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি ৪৯ শতাংশ কমে যায়।

৭) খাদ্য নালীর মধ্যে থাকা ক্ষতিকারক জীবাণু দূর করে, ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে থাকে ছোলা, ছোলা শর্করা দ্রুত রক্তে যায় না, তাই ডায়াবেটিস রোগের জন্য ছোলা খুবই উপকারী খাবার।

৮) প্রতিদিন ১০০ গ্রাম ছোলা রয়েছে , ১৭ গ্রাম প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট এবং ৫ গ্রাম রয়েছে ফ্যাট। 

৯) ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সোলার শর্করা খুবই ভালো , প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম লৌহ আছে ১০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ১৯০ মিলিগ্রাম। এছাড়া রয়েছে ভিটামিন B1 ভিটামিন b2, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। বলতে গেলে এসব গুলো ভিটামিন এ শরীরের উপকারে আসে।

১০) ছোলার ফ্যাট শরীরের জন্য একেবারেই ক্ষতিকারক নয় , বরং রক্তের চর্বি কমাতে সাহায্য করে থাকে। 

১১) কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে আদার সঙ্গে খেলে শরীরের প্রোটিন ও এন্টিবায়োটিক এর চাহিদাও পূরণ হয়। এটা শক্তি বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবান করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একেবারে বাড়িয়ে তোলে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে যারা প্রতিদিন ১ থেকে ২ কাপ ছোলা সিম এবং মটর খায় তাদের পায়ের আটোয়ারীতে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। তাছাড়া ছোলা স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আর্চারি কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।

এবার চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে।

১) হেলদি বোনের জন্য: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে বাদামের মধ্যে উপস্থিত ফসফরাস শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু ভাবে কাজ করে এবং প্রভাব ফেলে যার জন্য হাড়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এবং তার জন্য প্রতিদিন এক মুঠো করে বাদাম জলে ভিজিয়ে রেখে তার পরদিন সকালে উঠে খেয়ে নিতে হবে। এতে হাড় শক্ত হাতের হাড়ের ক্ষয় রোধ হবে।

২) পাওয়ারফুল ব্রেনের জন্য: আমেরিকার এন্ড ইউনিভার্সিটি তে রিচার্জ করে পাওয়া গেছে, যে বাদামের মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা কগনিটিভ অর্থাৎ সহজ কথায় বলা যায় যে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে, তাই জন্য পরীক্ষার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ম করে বাদাম খাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়ে থাকে।

৩) পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করার জন্য: মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসে এদেশে ঝাকিয়ে বসা এই প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩.৫ গ্রাম ফাইবার, ৬ গ্রাম প্রোটিন ,চৌদ্দগ্রাম ফ্যাক্ট এবং তার সাথে সাথে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ ভিটামিন-বি টু, ভিটামিন ই এবং ফসফরাস এবং তার সাথে সাথে ম্যাগনেসিয়াম। এর প্রত্যেকটি উপাদান শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে প্রয়োজন হয়। তার জন্য দেখা যায় অনেক ক্রনিক রোগ দূর দূরে রাখতে সাহায্য করে।  প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে যে এক মুঠো বাদাম খেলে শরীরে মাত্র ১৬১ ক্যালরী প্রবেশ করে এই জন্য এই খাবারটি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকেনা।

৪) ব্যাড কোলেস্টেরল কমানোর জন্য: গত কয়েক দশকে পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যায় যে অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টোরেলের জন্য হার্টের আক্রান্ত হওয়ার হার অনেক পরিমাণ বেড়ে গেছে। তাই এই বিষয়ে সাবধান থাকা টা ভীষণ পরিমাণে জরুরি, শরীরে যাতে কোনোভাবেই  ব্যাড কোলেস্টেরল এর মাত্রা না বেড়ে যায় তার জন্য আমাদের গুড কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়িয়ে রাখতে হয়। আর এই কাজটি ভালোভাবে করে কাঁচা বাদাম! বাদাম এর মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা গুড কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় , এবং  ব্যাড কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় এবং তার সাথে সাথে হার্ট কে হেলদি রাখতে সাহায্য করে।

 ৫) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য: বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে , সেই কারণেই ডায়াবেটিকস রোগীদের নিয়মিত বলা হয় বাদাম খাওয়ার জন্য, চিকিৎসকরা বলেন যে এই ডায়াবেটিক রোগের জন্য বাদাম খাওয়া খুবই উপকারী। এবং তার সাথে সাথে এই বাদাম খাওয়া অভ্যাস করলে টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়া সংখ্যা প্রায় ২৫ থেকে ৩৮ % পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

তো পাঠক-কেমন লাগলো আজকের প্রতিবেদন সেটি কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন। যদি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন আজকের মত এখানেই শেষ করছি ,ধন্যবাদ।

আরো দেখুন:

Google News