ডেঙ্গুজ্বর কি ও কেন হয়? এর চিকিৎসা

ডেঙ্গুজ্বর কি ও কেন হয়? এর চিকিৎসা

বর্তমানে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। তবে জ্বর হলেই যে ডেঙ্গু জ্বর হবে তা কিন্তু নয়! জ্বরের প্রকোপ আপনার কাছে বেশি মনে হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এই জ্বরে আক্রান্ত হলে একদিকে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে অন্যদিকে এর প্রভাব শরীরে থেকে যায় দীর্ঘদিন, তবে বিশ্রাম এবং নিয়ম মেনে চললেই এ থেকে পুরোপুরিভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 

ডেঙ্গু জ্বর কী ও কিভাবে ছড়ায়?

ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাস দ্বারা এবং এই ভাইরাস বাহিত এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার কামড়ে। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোন ব্যক্তিকে কামড়ালে, সেই ব্যক্তি ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। এবার এই আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোন জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে, সেই মশাটিও ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে। ডেঙ্গু প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে, ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভার এবং ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার।

এডিস মশা সাধারণত সকালে এবং সন্ধ্যায় কামড়াই তবে অন্য সময়েও কামড়াতে পারে, শিশু ও ছোট বাচ্চাদের মধ্যে এই জ্বরের প্রকোপ সাধারণত বেশি দেখা যায়। পুরুষের তুলনায় নারীদের এই বিপদে বেশি পড়তে দেখা যায় , ডেঙ্গু ভাইরাস সাধারণত ৪ ধরনের হয়ে থাকে! তাই ডেঙ্গুজ্বর ও কিন্তু ৪ রকম হতে পারে, কিংবা আপনার ৪ বার হতে পারে। যারা আগেও ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে , তাদের ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে ডেঙ্গু হলে তা মারাত্মক ঝুঁকি হতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ গুলো কিভাবে বুঝবো?

ডেঙ্গু জ্বর হলো ভাইরাসজনিত এক ধরনের তীব্র জ্বর, এই জ্বর অনেক ক্ষেত্রে কম হতে পারে, আবার বেশিও হতে পারে। দেখা যায় জ্বর ৩-৪ দিন পর ভালো হয়ে যায়। তবে এরপর প্লাটিলেট কম হতে থাকে আস্তে আস্তে, এরপর মাঝখানে একটি বিরতি দিয়ে আবার জ্বর আসে। এই জ্বরের সঙ্গে থাকে- প্রচন্ড মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, এবং চোখের পেছনে সাইডেও ব্যথা করতে পারে, বমি বমি ভাব হতে পারে ,খাবারে অরুচি হতে পারে। জ্বর সাধারণত ২ দিন থাকার পরই শরীরের বিভিন্ন জায়গায় *রেস* দেখা যেতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি করনীয় ?

প্রথমত ডেঙ্গু জ্বর হলে পরিচর্যা হিসেবে প্রথমেই আমাদেরকে যেটা করতে হবে তা হচ্ছে দ্রুতভাবে জ্বর কমাতে হবে। জ্বর কমানোর জন্য মাথায় পানি দিতে পারি , ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর বারবার মুছে দেয়া যেতে পারে, এ ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে মনে রাখবেন কোন অবস্থাতেই রোগীকে এসপিরিন জাতীয় কোন ধরনের ওষুধ খাওয়ানো যাবে না। রোগীকে প্রচুর পরিমাণে তরল এবং স্বাভাবিক খাবার খেতে দিতে হবে, বিশেষ করে- ফলের রস, ডাবের পানি , লেবুর শরবত ,জুস, এবং খাবার স্যালাইন খেতে দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া মনে রাখতে হবে রোগীকে সম্পূর্ণভাবে বিশ্রামে থাকতে হবে।

সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে বংশবিস্তার করে থাকে, সুতরাং আমাদের অফিস, ঘর , এবং আশেপাশে পানি জমতে দেওয়া একেবারেই যাবে না। যেকোনো পাত্রে জমিয়ে রাখা, বা জমে থাকা পানি ৩ দিনের মধ্যে পরিবর্তন করে ফেলতে হবে। এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায়, তাই যতসম্ভব লম্বা পোশাক পরিধান করা উচিত। দিনে ঘুমানোর ক্ষেত্রে মশারি ব্যবহার করা উচিত, শিশুদের হাফপ্যান্টের বদলে ফুলপ্যান্ট কিংবা পায়জামা পড়ানো যেতে পারে।

তো আশা করছি আপনি এই প্রতিবেদনটি পড়ে খুব সহজেই জানতে পেরেছেন-ডেঙ্গু জ্বর কি এবং এটি কেন হয় এবং এটির চিকিৎসা কি? প্রতিবেদনটি উপকারে আসলে নিশ্চয়ই শেয়ার করবেন আজকের মত এ পর্যন্তই ভালো থাকুন ধন্যবাদ।

আরো দেখুন:

Google News

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *