কাঠবাদাম আমাদের খুবই পরিচিত একটি খাদ্যদ্রব, আমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো এই কাঠবাদাম নিয়মিতভাবে খেয়ে থাকে, তবে এই বাদামের উপকারিতা গুলি হয়তো সকলের জানা নেই। আজ আমরা আলোচনা করব কাঠবাদাম এর সঠিক উপকারিতা গুলি এবং এর সাথে আলোচনা করব যে এই বাদাম কিভাবে কতটা পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে? ও কারা কারা কি বাদাম খেতে পারবেন না।
সব ধরনের বাদামের মধ্যে এই কাঠ বাদামের উপকারিতা সবচাইতে বেশি এর পুষ্টিগুণ এতটাই বেশি থাকে যে একে অনেকে সুপারফুড ও বলে থাকে।
প্রথমেই দেখে নিই কাঠ বাদাম এ কি কি রয়েছে.
কাঠবাদামের রয়েছে কার্বোহাইড্রেট ,ফাইবার, মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড ,প্রোটিন, রয়েছে ভিটামিন এ, বিওয়ান b২ b3 B4 b6 b7 ও রয়েছে ভিটামিন সি ,ডি ,ই ও -কে ) এছাড়াও পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম, কপার ,আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম ,সোডিয়াম, ও জিংক তাহলে বুঝতেই পারছেন যে কাঠ বাদামের পুষ্টিগুণ কতটা বেশি হতে পারে?
চলুন দেখে নেওয়া যাক এর উপকারিতা গুলি।
১) কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে: ১০০ গ্রাম কাঠ বাদামে ৪৯ গ্রাম ফ্যাট থাকাই , অনেকেরই ধারণা জন্মায় যে বাদাম খেলে হয়তো শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। তবে এই ৪৯ গ্রাম ফ্ল্যাটের মধ্যে ৩১ গ্রাম ই রয়েছে মনো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। যা শরীরের জন্য খুবই ভালো। এই মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এসিড রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের বা এইচডিএলের মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়াতে সক্ষম। ফলে নিয়মিত যদি কাঠ বাদাম খাওয়া যায় তাহলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
২) উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: উচ্চরক্তচাপ বিষয়ে কাঠবাদামের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে. ১০০ গ্রাম কাঠ বাদামের রয়েছে ৭০০ মিলিগ্রাম এর মত পটাশিয়াম। এই পটাশিয়াম শরীরের উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সক্ষম।
৩) হার্টের সমস্যায়: মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড যেহেতু কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ও পটাশিয়াম ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সেই ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে।
৪) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: কাঠ বাদাম এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও রয়েছে সামান্য পরিমানে কার্বোহাইডেট। যার ফলে নিয়মিত কাঠবাদাম খেলে রক্তে শর্করার উৎপাদন কম হয় ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫) ওজন নিয়ন্ত্রণে: কাঠবাদামে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড এর পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, এই ফ্যাটি এসিড যেমন শরীরে ফ্যাটের মাত্রা কমাতে সক্ষম, তেমনি প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় নিয়মিত কিছুটা পরিমাণ করে কাঠবাদাম খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৬) মস্তিষ্কের বিকাশে: শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে কাঠবাদাম খুবই উপযোগী, এই কাঠবাদামে ভিটামিন ই এর পাশাপাশি মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য অন্যান্য নিউট্রিয়েন্ট ও মিনারেলস রয়েছে। ফলে নিয়মিত কাঠবাদামের সেবন করলে যেমন শিশুদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি স্মৃতিশক্তি হ্রাস এর মত রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
৭) হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে: ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকায় নিয়মিত কাঠবাদাম সেবন করলে আমাদের হাঁড়ের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
এখন আমরা জানবো কাঠবাদাম কতটা পরিমাণে এবং কিভাবে খাবো?
১) সারাদিনে যে কোন সময়ে কাঠ বাদাম খাওয়া যেতে পারে , তবে রাতে এক মুঠো বাদাম জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খোসা ছাড়িয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
২) প্রতিদিন কমপক্ষে চারটি করে বাদাম খাওয়া যেতে পারে
এখন আমরা জানবো কাঠবাদাম কাদের খাওয়া উচিত না।
১) যদি কারোর কিডনির সমস্যা থাকে অথবা যদি কারো ইউরিয়া ক্রিয়েটিনিন বেশি থাকে তবে পটাশিয়াম প্রচুর থাকায় কাঠবাদাম তাদের না খাওয়াই ভাল।
আজকের পোস্টটিতে আমরা আলোচনা করলাম কাঠ বাদামের বিভিন্ন উপকারী দিক এবং তার সাথে সাথে সাইডএফেক্ট নিয়ে। তো এখানেই শেষ করছি, দেখা হবে পরবর্তী কোনো ইন্টারেস্টিং পোস্টে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আরো দেখুন: