আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সকলে সুস্থ্য ও নিরাপদে আছেন। আরবী রমজান মাসের পর সবচেয়ে পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ মাস হলো শাবান মাস। কারণ এই মাসের মাঝামাঝি সময়ে পবিত্র শবে বরাত পালিত হয়ে থাকে। এই মাসে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) অন্যান্য মাসের তুলনায় বেশি বেশি সাওম পালন করেছেন ও বিভিন্ন দোয়া পড়েছেন। 

সকল মুসলিম ভাই ও বোনেরা শবে বরাতের রাত্রি্তে জাগ্রত থাকেন ও বিভিন্ন ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকেন। অনেকেই শবে বরাতের পরের দিন নফল রোযা আদায় করে থাকেন। এই রাত্রিকে ভাগ্য নির্ধারণের রাত বলা হয়ে থাকে। তাই মুসলিম উম্মতের নিকটে এই রাতের তাৎপর্য অনেক। আরও দেখুনঃ আজকের বাজার দর ২০২৩

বাংলাদেশে শবে বরাত কবে ২০২৩

বাংলাদেশে শবে বরাত কবে ২০২৩

আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন শবে বরাত কবে পালিত হবে। তাই আপনাদের জন্য আমরা আজ জানিয়ে দিব ২০২৩ সালের শবে বরাত কবে পালিত হবে ও শবে বরাত কি এবং এই দিনে কি কি আমল করণীয় ও কি কি কাজ করা থেকে বিরত থাকা উচিত। 

শবে বরাত যে দিন পালিত হবে

পবিত্র শবে বরাত পালিত হবে আগামি ৭ই মার্চ ২০২৩ তারিখে। বাংলাদেশের আকাশে গত ২১শে ফেব্রূয়ারি শাবান মাসের চাঁদ দেখা যায়। ফলে শাবান মাস গণনা শুরু হয়েছে ২২শে ফেব্রূয়ারি ২০২৩ তারিখ থেকে। সেই হিসাব অনুযায়ী ১৯৪৪ হিজরির শাবান মাসের ১৪ তারিখ, বাংলা ১৪২৯ বঙ্গাব্দের ২২শে ফাল্গুন ও ইংরেজি ২০২৩ সালের ৭ই মার্চের দিবাগত রাত্রিতে শবে বরাত পালিত হবে। 

১৪৪৪ হিজরি সনের শাবান মাসের তারিখ নির্ধারণে গত ২১শে ফেব্রূয়ারি মঙ্গলবার বাদ মাগরিব ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররমের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান এর সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

সভায় শাবান মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধাণ কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয় সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, ২১শে ফেব্রূয়ারি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে শাবান মাসের চাঁদ দেখতে পাওয়ার সংবাদ পাওয়া গিয়েছে। আরও দেখুনঃ দেউলিয়া ব্যাংক তালিকা ২০২৩

এই প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ২২শে ফেব্রূয়ারি বুধবার থেকে ১৪৪৪ হিজরি সনের শাবান মাস গণনা শুরু হয়েছে। সভায় আরও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, শাবান মাসের ১৪ তারিখ অর্থাৎ ২০২৩ সনের ৭ই মার্চ দিবাগত রাতে শবে বরাত পালিত হবে। 

এই কারণে শবে বরতের পরের দিন অর্থাৎ ৮ই মার্চ সারাদেশে সরকারি ছুটি বহাল থাকবে। শাবান মাস আমাদের রমজান মাসের আগমনী বার্তা দিয়ে থাকে। 

শবে বরাত কি

আরবী শব্দ লাইলাতুল বারাআত ও ফার্সি শব্দ শবে বরাতের অর্থ হলো মুক্তির  রজনী বা ভাগ্য রজনী। শাবান মাসের মধ্য রজনীতে আল্লাহর নিকট থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহ পাওয়ার আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যে ইবাদত বন্দেগী করে রাত্রি যাপন করে তাই শবে বরাত নামে পরিচিত। 

এই রাতে কেউ নফল নামাজ পড়েন, কেউ কুরাআন তেলওয়াত করেন, কেউ জিকির করেন আবার অনেকে দান খয়রাত করে থাকেন। সারা রাত ইবাদতের মধ্যে কাটিয়ে পরের দিন অনেকেই সাওম পালন করে থাকেন। 

হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল (রাঃ) বলেন, “ নবী করিম হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। 

তাই আমরা এই পবিত্র রাতে আল্লাহর ক্ষমা ও অনুগ্রহ পাওয়ার জন্য বেশি বেশি ইবাদত বন্দেগী করব ইনশাল্লাহ। এই পবিত্র রাতের ওসিলায় আমরা আমদের ইমানকে আরও মজবুত করার চেষ্টা করব। আরও দেখুনঃ এসএসসি পরীক্ষার রুটিন ২০২৩ (সকল বোর্ড) | ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার রুটিন

শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয় কাজ

দুই ঈদের পর মুসলমানদের জন্য আরও একটি খুশির রাত হলো শবে বরাতের রাত। আমরা এই রাতে অনেকেই ইবাদত করে রাত্রি যাপন করব। কিন্তু অনেকেই এই রাত নিয়ে একটু বাড়াবাড়ি করা থাকে। ফলে শবে বরাতের পবিত্রতা অনেকটাই কমে যায় এবং তারা আল্লহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়। তাই আমাদের সকলের জানা উচিত এই পবিত্র রাতে আমরা কি কি কাজ করব আর কি কি কাজ থেকে বিরত থাকব।

শবে বরাতে যা যা করা উচিত

  • বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা।
  • নামাজে রুকু ও সেজদা দীর্ঘ করা।
  • কুরআন শরীফ তেলওয়াত করা।
  • দরুদ শরীফ বেশি বেশি পড়া।
  • কবর জিয়ারত করা।
  • তওবা ইস্তেগফার করা।
  • নিজের জন্য ও আত্বীয় স্বজনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা।
  • পরের দিন নফল রোযা রাখা। 

শবে বরাতে যা করা উচিত নয়

  • ইবাদত বাদ দিয়ে অহেতুক ঘুরে বেড়ানো।
  • আতশ বাজি ফুটানো
  • অতিরিক্ত আলোক সজ্জা করা।
  • অন্যের ইবাদতের ক্ষতি করে এমন কাজ না করা।
  • হালুয়া রুটি খাওয়ার নামে বাড়াবাড়ি না করা। 

শবে বরাতে আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে থাকে। তাই আসুন আমরা সকল মুসলিম ভাই ও বোনেরা এই রাতের পবিত্রতা রক্ষা করে নিজেদের ও আত্বীয় স্বজনের জন্য বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করি মহান আল্লাহ তায়ালার নিকটে। আল্লাহ আমাদের সকলকে সুস্থ্যতা দান করবেন ও তার স্নেহের বান্দা হিসেবে কবুল করবেন এই কামনায় আজকের মত শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।

Google News