কাজের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে আমাদের আবেদন পত্র বা দরখাস্ত লেখার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু আবেদন পত্র বা দরখাস্ত লেখার সঠিক নিয়ম না জানার কারণে একটি সঠিক বা ভালো মানের দরখাস্ত লেখার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আজকের পোস্টটিতে আমরা নমুনাসহ কিভাবে সঠিক নিয়মে একটি আবেদনপত্র লিখতে হয় সেটি জেনে নেবো।
আবেদন পত্র কী?
ব্যবহারিক প্রয়োজনে শিক্ষাক্ষেত্রে, সরকারী, বেসরকারী কিংবা কোন ব্যবসা ক্ষেত্রে নানা- কারনে আবেদন জানিয়ে সে পত্র লেখা হয় তাকে আবেদন পত্র বলে।
আবেদনপত্র বিভিন্ন ধরনের হতে পারে:
- ১. কেউ চাকরির জন্য দরখাস্ত লিখতে যান।
- ২. কেউ অফিসিয়াল বিভিন্ন কাজে দরখাস্ত লিখতে যান।
- ৩. আবার ছাত্রছাত্রীরা তাদের প্রতিষ্ঠানিক নানা কারণে, স্কুল-কলেজের প্রধান কে এড্রেস করে দরখাস্ত লিখতে চান।
মূলত কাজের ধরন অনুসারে দরখাস্ত বিভিন্ন রকম হতে পারে ,তবে যত ধরনেরই দরখাস্ত হোক না কেন আবেদনপত্র বা দরখাস্ত লেখার কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। যেগুলো আয়ত্ত করতে পারলে যে কোন ধরনের আবেদন পত্র লেখা খুবই সহজ হবে। আজকের আর্টিকেলে সেই নিয়ম গুলিই আমরা জেনে নিব।
সচেতনতা:
- ১.আবেদন পত্র দরখাস্ত লেখার সময়, সব সময় সাদা কাগজের ব্যবহার করতে হবে।
- ২. কাগজের বাঁদিকে উপরের কিছু অংশ মার্জিন দেওয়ার মতো জায়গা গ্যাপ রাখতে হবে।
- ৩. এবং চেষ্টা করতে হবে পুরো আবেদনপত্রটি ওই পেজের মধ্যেই শেষ করতে।
এরপর যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে সেটি হল পত্রের ভাষা:
- ৪. আবেদনপত্রের ভাষা সবসময় সহজ সরল হবে, কঠিন দুর্বোধ্য ভাষা এখানে ব্যবহার করা চলবে না।
- ৫.এরপর যে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে সেটি হল আবেদনপত্রের লেখা। অর্থাৎ দরখাস্ত আবেদন পত্র লেখা পরিস্কার ও স্পষ্ট হতে হবে, পত্রের ভিতরে কাটাকাটি করা যাবে না এবং খেয়াল রাখতে হবে পত্রটি যেন একটি নির্ভুল বানানে লেখা হয়।
- ৬. এরপর যে বিষয়ে সচেতনতা আবেদনপত্রের ক্ষেত্রে ভীষণ জরুরী সেটি হল যথাস্থানে নাম-ঠিকানা তারিখ লিখতে হবে।
- ৭. সর্বশেষ বিষয়টি হলো পত্রের নিয়ম রীতি-অর্থাৎ বিষয় অনুযায়ী নিয়ম-নীতি মেনে আবেদনপত্র লিখতে হবে।
একটি সঠিক আবেদনপত্র লিখতে হলে প্রথমে এই বিষয়গুলো সচেতনতা ভীষণ জরুরী।
এখন আমরা জেনে নেবো দরখাস্ত লেখার যে নির্দিষ্ট নিয়ম গুলো রয়েছে সেগুলি কি কি?
- ১. প্রথমে আছে প্রাপক নাম-ঠিকানা অর্থাৎ যার কাছে দরখাস্ত লেখা হবে সেই ব্যক্তির নাম এবং তার ঠিকানা বা যদি কোন প্রতিষ্ঠান লেখা হয় সেই প্রতিষ্ঠান নাম এবং ঠিকানা।
- ২. এরপরে নিয়মটি হল আবেদনের বিষয়ে অর্থাৎ যে বিষয়ে আবেদন করা হবে সেই বিষয়টি সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে।
- ৩. আবেদনপত্র লেখার নিয়ম টি হল সম্ভাষণ অর্থাৎ যে প্রাপকের কাছে আবেদন পত্র লেখা হবে তাকে তাকে জনাব মহাশয় অথবা ম্যাডাম বলে সম্ভাষণ করতে হবে।
- ৪. আবেদন পত্র চতুর্থ নিয়মে আছে আবেদনের বিষয়ে গঠনমূলক বর্ণনা অর্থাৎ এখানে মূল পত্রাংশ বর্ণনা করতে হবে, আর সেই বর্ণনার মধ্যে একটা গঠনমূলক সংগতি থাকতে হবে।
- ৫. আবেদনপত্র লেখার পঞ্চম নিয়মটি হল প্রেরকের নাম ও ঠিকানা। অর্থাৎ যিনি আবেদনপত্রটি করবেন এখানে সেই প্রেরকের নাম অথবা ঠিকানা এখানে উল্লেখ করতে হবে।
- ৬. আবেদনপত্র লেখার পরবর্তী নিয়মটি হল তারিখ- অর্থাৎ যে সময়ে দরখাস্ত লেখা হবে ওই দিনের তারিখ দরখাস্তের মধ্যে উল্লেখ করতে হবে।
তো এই হল একটি আবেদনপত্র লেখার সঠিক নিয়ম যেকোনো ধরনের আবেদন পত্র লেখার ক্ষেত্রে এই নিয়ম গুলি অবশ্যই মানতে হবে। আর যেকোন দরখাস্তের ক্ষেত্রে এই নিয়মগুলো যদি যথাযথভাবে উল্লেখ থাকে, তাহলে সে দরখাস্তটি একটি ভালো মানের দরখাস্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে আবেদনপত্র লেখার ক্ষেত্রে আরও দুটি বিষয় প্রয়োজন অনুসারে যুক্ত হতে পারে যেমন- (সংযুক্তি ও খাম) সংযুক্তি বলতে বোঝায় কোন আবেদন পত্রের আবেদন করার প্রমাণ স্বরূপ কোন তথ্য সংযোজন যেমন- অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আবেদনপত্র লিখলে সেখানে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অথবা চাকরির জন্য আবেদন পত্র হলে সেখানে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ স্বরূপ যে কাগজপত্রগুলো যোগ করা হবে সেটি সেটিকে বলা হয় সংযুক্ত, তবে সেটি প্রয়োজন অনুসারে হতে পারে।
আরেকটি বিষয় রয়েছে সেটি হলো (খাম) অর্থাৎ সৌজন্যবোধের উদ্দেশ্যে কখনো কখনো খামের প্রয়োজন হতে পারে, এই সংযোগ ও খাম নিয়মাবলী এর মধ্যে প্রয়োজন অনুসারে যুক্ত হতে পারে। তো এই হলো একটি আদর্শ পত্র লেখার প্রয়োজনীয় নিয়মাবলী।
এখন আমরা একটি আবেদনপত্র লেখার ফরমেট দেখে নেব। নিচে আমরা একটি আবেদন পত্রের ফরমেট দেখতে পাচ্ছি।
এবার চলুন এই আবেদনপত্রটির পূর্ণ বর্ণনা মার্ক করে নিচে আরেকটি ফটো দিই তাহলে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।
তো পাঠক এই হল মূলত একটি পত্রের পূর্ণ বর্ণনা, আপনি চাইলেই এই পত্রের পুরো বর্ণনা কে প্যারা করেও লেখা যেতে পারে। তো এই ছিল আমাদের আজকের আয়োজন আশা করছি আমাদের আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি সঠিক নিয়মে জানতে পারলেন কিভাবে একটি দরখাস্ত পত্র লিখতে হয়। বুঝতে কোথাও অসুবিধা হলে কমেন্ট সেকশনে জানাবেন সমাধান দেয়ার চেষ্টা করব। পোস্টটি কাজের মনে হলে শেয়ার করে দিতে পারেন আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি ভালো থাকুন টাটা।
আরো দেখুন:
- আর্সেনিক দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা
- জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রচনা
- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা
- ঘুরে দাঁড়াও pdf free download – ঘুরে দাঁড়াও বই
- মানবজীবনে অবকাশ রচনা
- শিক্ষার মান উন্নয়ন/শিক্ষার মানোন্নয়ন রচনা
- সহিষ্ণুতার মূল্য রচনা
- মানব সম্পদ উন্নয়নে শিক্ষার গুরুত্ব রচনা
- বাংলা নববর্ষ রচনা
- বাংলাদেশের বর্ষাকাল রচনা
- বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা রচনা
- বাংলাদেশের বন্যা সমস্যা ও তার প্রতিকার রচনা
- গণতন্ত্র ও বাংলাদেশ রচনা
- মহত্ত্ব রচনা
- স্বাধীনতা যুদ্ধে বিদেশিদের ভূমিকা রচনা
- কুটির শিল্প রচনা
- বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষসম্পদ উন্নয়ন রচনা
- বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষক রচনা
- রূপসী বাংলাদেশ রচনা
- যুব সমাজের অবক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার রচনা