কি! আপনি নিশ্চয়ই জানতে চাইছেন পাদ কয় প্রকার। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা পাদ কি, পাদ কয় প্রকার, ঘন ঘন পাদ আসে কেন, পাদের উপকারিতা ও পাদ সম্পর্কে অবাক করা কিছু তথ্য আলোচনা করব। যা শুনে আপনারা আশ্চর্য হবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক। আরও দেখুনঃ বাংলা ক্যাপশন
পাদ কাকে বলে?
সাধারণত পাকস্থলীতে লুকিয়ে থাকা বায়ু যে বিশেষ প্রক্রিয়ায় পায়ু পথ হতে নির্গত হয় তাকেই পাদ বলে। পাদ এর ইংরেজি শব্দ হলো (Feet)। যা মানবজাতির জন্য অতি প্রাকৃতিক একটি প্রক্রিয়া।
পাদ কয় প্রকার?
সাধারণত পাদের ধরন ও বায়ুত্যাগের সময়কালের উপর নির্ভর করে পাদ চার প্রকার। যথাঃ
- ঠাস পাদ
- ফুস পাদ
- কুইয়া পাদ
- ঝোল পাদ
ঠাস পাদঃ যে পাদ মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করে তাকে বলে ঠাস পাদ বলে। এই পাদগুলো সাধারণত হরেক রকমের মন মাতানো সুরের সাথে নিজেদের আগমন ঘটায়। তবে এদের বিরুদ্ধে শব্দ দূষণের অভিযোগ থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষকে বিনোদিত করে।
ফুস পাদঃ নিজেকে মুক্ত করার জন্য পায় পথের কাছাকাছি এসে আকুপাকু করে শব্দ ছাড়া বের হয় তাকে পুষ্পা বলে। এসব পাদের শব্দের কোনো অস্তিত্ব নেই। ঘ্রাণ সুকে এদের অস্তিত্ব অনুভব করা যায়। এ ধরনের পাদ সাধারণত পরিবেশ দূষণ করে থাকে।
কুইয়া পাদঃ এই পাদের অপর নাম চুরাবাদ। এটা লম্বা সময় ধরে পায়খানা আটকে রাখার পরের পাদ। হিরোশিমাল বোমার চাইতেও ভয়ঙ্কর বলা হয় একে। মানুষের ভিড়ে এটা ছেড়ে দিলে খুনের মামলার আসামি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ঝোলপাদঃ ডায়রিয়ার সময় এই পাদ হয়ে থাকে। চলাফেরার মুহূর্তে এই পাদ ছেড়ে দেওয়া একটু ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ যেকোনো সময়ে হলুদ ঝোল প্যান্টে মাখামাখি হয়ে যেতে পারে। এই পাদের শব্দ সাধারণত ফের ফের বা ভের ভের হয়ে থাকে। আরও দেখুনঃ ইমোশনাল স্ট্যাটাস
পাদের উপকারিতা
পাদ নিয়ে অনেকেই নাক সিটকায়। আবার অনেকেই হাসাহাসি করেন। আবার অনেকেই আছেন যারা পাদ মারা কে অভদ্রতা বলে মনে করেন। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে পাদ মারা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যেমনঃ
- পেট ফাঁপা বন্ধ করে
- কি খাওয়া উচিত তা পাদের গন্ধ বলে দেয়
- পাদের গন্ধ রোগ দূর করে
- পেটের এলার্জি নির্ণায়ক
- হার্ট ভালো রাখে
- কোলনের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
- ভালো হজম ক্ষমতা ও সুস্থ পেটের নির্দেশক হিসেবে কাজ করে
- কিডনি ভালো রাখে
- পরিপাকতন্ত্রের নড়াচড়া ঠিক রাখে
- ক্ষুধা বৃদ্ধি করে
সুতরাং বলা যায়, মানব জীবনে পাদের গুরুত্ব অপরিসীম। পাদ দিতে না পারলে মানুষের পেটে মিথেন গ্যাস জমে যেত আর মানুষ মহাশূন্যে উড়ে যেত। তাই পাদ নিয়ে লজ্জার কিছু নেই। আরও দেখুনঃ ছবি সংগ্রহ
পাদের গন্ধ হয় কেন?
পাদ একটি গ্যাসীয় পদার্থ। পাদের প্রধান উপাদান নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, মিথেন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড। এই সবগুলো গ্যাস মিলে পাদের ৯৯% উপাদান সৃষ্টি হয়। বাকি ১পার্সেন্ট সালফার জাতীয় গ্যাস। সালফার জাতীয় গ্যাসের মধ্যে অন্যতম হলো হাইড্রোজেন সালফেট, মিথেন, মিথাইলওল সালফাইড, এবং ডাই মিথাইল সালফাইড। এদের মধ্যে হাইড্রোজেন সালফাইড হলো পাদের গন্ধের প্রধান কারণ। আরও দেখুনঃ এক্সপ্রেস ভিডিও বাংলা
তবে যেসব খাবারে সালফারযুক্ত অ্যামিনো অ্যাসিড যেমন মাছ-মাংস বা প্রাণিজ আমিষ থাকে সেগুলো খেলে পরিপাক হয়ে প্রচুর সালফার গ্যাস তৈরি হয়। এই গ্যাস পাদের সাথে মিশে পাদের গন্ধ সৃষ্টি করে। আবার অনেক শাকসবজিতে সালফার থাকে উচ্চমাত্রায়। এগুলোও সালফার জাতীয় গ্যাস সৃষ্টি করে। আবার অনেক সময় খাবার ঠিকমতো হজম না হওয়ার কারণে সেগুলো ব্যাকটেরিয়া সাহায্যে ফার্মেন্ট হয় এবং প্রচুর মিথেন গ্যাস তৈরি করে এটাও পাদের গন্ধ সৃষ্টি করে। দীর্ঘ সময় মলত্যাগ না করলে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যায় ফলে গন্ধযুক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হয় যেটা পাদের গন্ধের জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এছাড়াও যে সকল কারণে পাদের গন্ধ হয় সেগুলো হলঃ
- কোলন ক্যান্সার
- পেটের ক্ষত
- কোন এন্টিবায়োটিক সেবন
- পেটের অসুখ
- খাদ্যের প্রতি এলার্জি
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- মাংস বেশি খাওয়া
- বদহজম
- সালফার যুক্ত খাবার খাওয়া
- উচ্চ সাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া।
পাদের গন্ধ দূর করার উপায়
পাদের গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে যা করবেন সেগুলো হলোঃ
- ব্যায়াম করুন
- পেটে কম বাতাস ঢুকতে দিন
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করুন
- বড় ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহণ করুন
- পরিমিত পানি পান করুন
- বদহজম ও এসিডিটির চিকিৎসা করুন
- রাতে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে
- বিয়ার বা মদ্যপান করা যাবে না
- বাদাম কম খেতে হবে
- ডিম কম খাওয়াই ভালো
- চা কফি কম পান করুন
- মাংস কম খেতে হবে
- ফাস্টফুড পরিহার করুন
- রাতে শাকসবজি কম খাবেন
- পেঁয়াজ ও রসুন কম ব্যবহার করুন
- দুধ খাবেন না
- অল্পকার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার কম খান
- গ্যাস সৃষ্টিকারী খাবার কম খাবেন।
যাইহোক, সবকিছুর পরে একটা কথাই বলা যায়, পাদ হল বিনোদনের একটি অন্যতম মাধ্যম। তাই নিজে পাদুন এবং অন্য কে পাদতে উৎসাহিত করুন। ধন্যবাদ।।