দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চিকিৎসকেরা বলে যে আপনার ফুড হ্যাবিট হল এমন একটি জিনিস যা আপনাকে সুস্থ রাখতে পারে। তাই আপনি কী খাচ্ছেন ,কি পান করছেন ,তার উপরে আপনার গোটা ডায়েট যেমন নির্ভর করে তেমনি আপনার লাইফ স্টাইল নির্ভর করে, এবং সেই লাইফ স্টাইল যদি ভাল হয়, তবেই আপনার জীবন আরো হেলদি হয়ে উঠবে।

এ ক্ষেত্রে সব সময় সম পরিমান প্রোটিন ভিটামিন এবং কার্বোহাইড্রেট খেতে বলা হয়, এমন ধরনের সুষম খাবার সব সময় পাওয়া নাও যেতে পারে কিংবা তার দাম অনেক হতে পারে। কিন্তু তেমন ই একটি সুষমো খাবার আমরা জানি তা হলো বাদাম। কাচা বাদাম তাই আমারা পানি তে ভিজিয়ে তারপরে খেয়ে নিতে পারি। পুষ্টিগুণ এবং শারীরিক উপকারিতা দিক থেকে দেখতে গেলে বাদাম এর কোন বিকল্প হয় না।

এতে রয়েছে শরীরে মজুদ করার জন্য প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ,ফাইবার সেলেনিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ,অ্যামাইনো অ্যাসিড, পটাশিয়াম এবং তার সাথে সাথে ওমেগা ৩ফ্যাটি এসিড। আরো কত কিছু রয়েছে যা শরীরে অনেক ভাবি কাজে লাগতে পারে।

এবারে জেনে নিই কাঁচা বাদাম খাওয়ার কিছু উপকারিতা!

১) হেলদি বোনের জন্য: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে বাদামের মধ্যে উপস্থিত ফসফরাস শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু ভাবে কাজ করে এবং প্রভাব ফেলে যার জন্য হাড়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এবং তার জন্য প্রতিদিন এক মুঠো করে বাদাম জলে ভিজিয়ে রেখে তার পরদিন সকালে উঠে খেয়ে নিতে হবে। এতে হাড় শক্ত হাতের হাড়ের ক্ষয় রোধ হবে।

২) পাওয়ারফুল ব্রেনের জন্য: আমেরিকার এন্ড ইউনিভার্সিটি তে রিচার্জ করে পাওয়া গেছে, যে বাদামের মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা কগনিটিভ অর্থাৎ সহজ কথায় বলা যায় যে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে, তাই জন্য পরীক্ষার আগে ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ম করে বাদাম খাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়ে থাকে।

৩) পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করার জন্য: মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসে এদেশে ঝাকিয়ে বসা এই প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩.৫ গ্রাম ফাইবার, ৬ গ্রাম প্রোটিন ,চৌদ্দগ্রাম ফ্যাক্ট এবং তার সাথে সাথে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ ভিটামিন-বি টু, ভিটামিন ই এবং ফসফরাস এবং তার সাথে সাথে ম্যাগনেসিয়াম। এর প্রত্যেকটি উপাদান শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে প্রয়োজন হয়। তার জন্য দেখা যায় অনেক ক্রনিক রোগ দূর দূরে রাখতে সাহায্য করে।  প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে যে এক মুঠো বাদাম খেলে শরীরে মাত্র ১৬১ ক্যালরী প্রবেশ করে এই জন্য এই খাবারটি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকেনা।

৪) ব্যাড কোলেস্টেরল কমানোর জন্য: গত কয়েক দশকে পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যায় যে অনিয়ন্ত্রিত কোলেস্টোরেলের জন্য হার্টের আক্রান্ত হওয়ার হার অনেক পরিমাণ বেড়ে গেছে। তাই এই বিষয়ে সাবধান থাকা টা ভীষণ পরিমাণে জরুরি, শরীরে যাতে কোনোভাবেই  ব্যাড কোলেস্টেরল এর মাত্রা না বেড়ে যায় তার জন্য আমাদের গুড কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়িয়ে রাখতে হয়। আর এই কাজটি ভালোভাবে করে কাঁচা বাদাম! বাদাম এর মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা গুড কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় , এবং  ব্যাড কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় এবং তার সাথে সাথে হার্ট কে হেলদি রাখতে সাহায্য করে।

 ৫) রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য: বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তে উপস্থিত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে , সেই কারণেই ডায়াবেটিকস রোগীদের নিয়মিত বলা হয় বাদাম খাওয়ার জন্য, চিকিৎসকরা বলেন যে এই ডায়াবেটিক রোগের জন্য বাদাম খাওয়া খুবই উপকারী। এবং তার সাথে সাথে এই বাদাম খাওয়া অভ্যাস করলে টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়া সংখ্যা প্রায় ২৫ থেকে ৩৮ % পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

কাঁচা বাদামের মধ্যে যেমন কতগুলি পজেটিভ দিক রয়েছে, তেমনি রয়েছে কতগুলি নেগেটিভ দিক!

যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকম ভয়ানক সাইডএফেক্ট যা আমাদের শরীর আরো খারাপ করে তুলতে পারে।

১) পেটের ফোলা ভাব হজমের সমস্যা এইরকম ধরনের সাইডএফেক্ট বাদামের মধ্যে আসতে পারে, কাঁচা বাদাম যদি অতিরিক্ত খাওয়া হয় তাহলে তার জন্য গ্যাস জমা হতে পারে এবং তার সাথে সাথে বাদামের মধ্যে থাকা ফাইটিস এবং ট্যানিন জাতীয় যৌব গুলো আমাদের শরীরে পাকস্থলীর হজম করতে সমস্যা করতে পারে।

২) তার সাথে সাথে কাঁচা বাদাম আমাদের শরীরের টক্সিন এর পরিমাণ কেও বাড়িয়ে দিতে পারে।

আজকের পোস্টটিতে আমরা আলোচনা করলাম বাদামের বিভিন্ন উপকারী দিক এবং তার সাথে সাথে বিভিন্ন রকম সাইডএফেক্ট নিয়ে। তো এখানেই শেষ করছি, দেখা হবে পরবর্তী কোনো ইন্টারেস্টিং পোস্টে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

আরো দেখুন:

Google News