আল আমিন (নাফিস)। ৩৮ তম বিসিএসে আনসার ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। মেধাক্রম ৮ম। তিনি ৩৬ তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সরকারি কলেজে বোটানি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। নেত্রকোনা সদর উপজেলার মৌগাতি ইউনিয়নের খাটপুরা গ্রামের আব্দুল গণি (রেনু) ও রহিমা খাতুন দম্পতির বড় সন্তান আল আমিন।
চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনিই সবার বড়। ওই গ্রামের প্রথম বিবিএস ক্যাডার সে। আল আমিন নেত্রকোনা সরকারি কলেজ থেকে বোটানি বিভাগে (২০০৬-২০০৭) স্নাতক ও আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০০৪ সালে মারাদিঘী গোলাম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০০৬ সালে নেত্রকোনা সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৯৮ প্রাথমিকে বৃত্তিতেও উত্তীর্ণ হয় সে।
আরো দেখুনঃ অনুপ্রেরণার গল্প
এইচএসসি পাশের পর আল আমিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বন বিভাগে ভর্তির সুযোগ পায়। কিন্তু তার বাবা ছেলেকে এতোদূর পাঠাতে রাজি হননি। পরে তিনি নেত্রকোনা সরকারি কলেজে ভর্তি হন। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশনি ও কোচিং করিয়ে নিজের খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারকেও সাহায্য করতে হতো তাকে। পরিবারকে সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দিতে স্নাতকে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই বাংলাদেশ শুল্ক ও গোয়েন্দা বিভাগে তৃতীয় শ্রেণির চাকরিতে যোগদান করেন। পরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে বাংলাদেশ পুলিশে সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) হিসেবে যোগদান করেন। পরে ৩৬
তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে পু্লিশের চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতায় যোগদান করেন। সেখানে কর্মরত থাকা অবস্থাতেই ৩৮ তম বিসিএসে আনসার ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। আল আমিন বলেন, ৫ম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়ার পর থেকেই আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন দেখতাম। তখন বিসিএস কি বুঝতাম না। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও বাবার অমতে ভর্তি হতে না পেরে যথেষ্ট হতাশ হয়েছিলাম।
আরো দেখুনঃ চাকরির খবর
পরে অনার্স তুতীয় বর্ষে পড়ার সময় বিসিএস সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারি। তথন থেকেই আমি বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। আমি প্রচুর টিউশনি করাতাম। যা আমার বিসিএসের প্রস্ততিতে সহায়ক ছিল। তিনি বলেন, আমার ভেতরে একটি জিদ ছিল যে বিশ্বদ্যিালয়ে ভর্তি না হতে পারার হতাশা বিসিএস ক্যাডার হওয়ার মধ্য দিয়ে পূরণ করবো।
অনুপ্রেরণা বিষয়ে আল আমিন বলেন, আমার সফলতার পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার মা। মা সব সময়ই আমার মাথায় হাত রেখে বলতেন- বাবা চাকরিতো সবাই করে, তুমি যদি বিসিএস ক্যাডার হতে তাহলে সবাই আমাকে বিসিএস ক্যাডারের মা বলে সম্বোধন করতো। এছাড়া আমার বাবা একজন সৎ ও ধার্মিক ব্যক্তি, তিনি সবসময় সন্তানদের সৎভাবে ভালো কিছু করার কথা বলতেন। আমার বাবাও আমার সফলতার পেছনের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন।