সামাজিক আইন কি: সমাজ সৃষ্টির পর থেকেই সমাজে কিছু বিধিনিষেধ এর বিধান রাখা হয়েছে।সুদূর প্রাচীনকাল থেকে আমার ব্যবস্থায় মানুষকে ও নিয়ন্ত্রণ করতে নানারকম বিধিনিষেধের এ বিধান রাখা হয়। মানুষ পারস্পরিকভাবে বসবাসের ক্ষেত্রে যাতে কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয় সেক্ষেত্রে তারা কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলে। যা পরবর্তীকালের সামগ্রিক রূপ হচ্ছে সামাজিক আইন। বর্তমানে সামাজিক আইনের গুরুত্ব অপরিসীম। আরও দেখুনঃ সমাজকর্ম গবেষণার সংজ্ঞা | সমাজকর্মের গবেষণা কাকে বলে
সামাজিক আইন কি
সামাজিক আইনের গুরুত্ব
১.সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা: সামাজিক আইন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজে বিদ্যমান বিশৃঙ্খলা দূর করে শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে এবং সামাজিক কার্যক্রমকে পরিবর্ধিত করতে থাকে। সামাজিক শৃঙ্খলা ও অগ্রগতির স্বার্থে মানবীয় আচার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে হয় আর এতে সামাজিক আইন মূলত নাগরিকদের শাস্তি দেয়া ও ভয় দেখিয়ে মানবীয় আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের সুস্থ ও সুন্দর জীবন লাভের ব্যবস্থা করেন। আরও দেখুনঃ শিল্পায়ন ও নগরায়নের ফলে সৃষ্ট সমস্যা | বাংলাদেশের শিল্পায়নের সমস্যা ও সম্ভাবনা
২.সমাজের বাঞ্ছিত পরিবর্তন: সমাজ হলো একটি সংগঠন আর এই সংগঠনে বিভিন্ন ধরনের মানুষ বসবাস করে। কাজেই তাদের মধ্যে অবাঞ্চিত ঘটনার সৃষ্টি হতে পারেন। আর এজন্য সামাজিক পরিবেশের উন্নয়নে সামাজিক আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামাজিক আইন সমাজের বাঞ্ছিত পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে সমাজের কল্যাণ বয়ে আনে। এবং কেউ ইচ্ছা করলেই আইন বিরোধী কাজ করতে পারে না।
৩.সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের স্বার্থ রক্ষা ও উন্নয়নে প্রতি সমান সম্মান দিয়ে এবং গুরুত্বের সাথে সামাজিক আইন কাজ করেন। এক্ষেত্রে আইনের সঠিক প্রয়োগ এর মাধ্যমে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা হয়। সামাজিক সাম্য, ন্যায় বিচার ও মানুষের মধ্যে সুসম বন্টন করে সামাজিক সমতা ফিরিয়ে আনেন সামাজিক আইন।
৪.সামাজিক সামঞ্জস্য বিধান: সামাজিক আইন সমাজের স্থিতিশীলতা ক্ষেত্রে কাজ করে সমাজের সুসামঞ্জস্য বজায় রাখে। প্রগতিশীল সমাজ ব্যবস্থার সাথে মানুষ যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে আর তাদের এই চলার পথে যেন কোনো বাধা সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সামাজিক আইন সহায়তা করে। সমাজের সবাই মিলে সুসামঞ্জস্য ভাবে সামাজিক কাজ করবে আর এ সামঞ্জস্যপূর্ণ কাজে সামাজিক আইন সহায়তা করে।
৫. সম্পদের সুসম বন্টন: সমাজে সব শ্রেণীর মানুষের বসবাস। সেখানে কেউ ধনী কেউ গরীব বাস করে। ফলে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট হতে পারে। সামাজিক আইনের মাধ্যমে সম্পদের সুষম বন্টন এর ভিত্তিতে শ্রেণী বৈষম্য দূরীকরণ সম্ভব হতে পারে।
উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যে, সমাজে প্রচলিত বিশৃঙ্খলা থেকে সমাজের মানুষের মাঝে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সামাজিক আইনের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। সমাজের অবহেলিত, নিপীড়িত, নির্যাতিত মানুষের নিরাপত্তায় ,সাহায্য-সহায়তার কর্মসূচি হিসেবে একটি সুসংগঠিত ও পরিকল্পিত প্রতিষ্ঠান হল সামাজিক আইন।